Latest Post

কওমীর স্বীকৃতি ও দেবিমূর্তি বিরোধী বক্তব্য আর রাজনৈতিক স্বার্থের ভেল্কিবাজি: মুহাম্মাদ মামুনুল হক

ঢাকা ১৩ই এপ্রিল'১৭ আজকের প্রথম আলোর প্রথম পাতায় প্রধান শিরোনাম দেখে মনে পড়ছে দুই হাজার ছয়ের কথা ৷ যখন হযরত শায়খুল হাদীস রহঃএর দলের...

Thursday, March 2, 2017

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে ইসলাম

আরিফ মাহমুদ 
সন্ত্রাস আরবি ফাসাদ শব্দের সমার্থক শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ ত্রাস সৃষ্টি
করা,হয়রানি,খুন-খারাবি,ছিনতাই ইত্যাদি। আর ব্যাপক অর্থে বলা যায়, নানারকম
অত্যাচার-অবিচার,খুন-হত্যা,বোমাবাজি,ডাকাতি,ছিনতাই ইত্যাদির মাধ্যমে সাধারণ
মানুষ কে জিম্মি করে রাখার নাম ই হলো সন্ত্রাস। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে
সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নবুওয়াতের তেইশ বছর জিন্দিগিতে
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।
বস্তুত আজকে যারা জিহাদের নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে তাদের আসল
পরিচয় কি, সে ব্যাপারে জাতি অন্ধকারে নিমজ্জিত রয়েছে। তারা কি মুসলমান,
মুনাফিক, নাকি ইয়াহুদি-খৃষ্টানদের দোসর বা চর তা বলা মুশকিল। রাসূলুল্লাহর
যামানায় ও তো মুনাফিকরা মুসলমানদের মতো দাড়ি,টুপি,পাঞ্জাবি পড়তো! আবার
সারাদিন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতো ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে। নবাব
সিরাজুদ্দৌলার সেনাপতি মীর জাফর ও তো মুসলমান হিসেবে পরিচিত ছিল। ঠিক তদ্রুপ
আজকে যারা ধর্মের নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করছে ওরা তাদের উত্তরসূরী। অবশ্য
তাদের সাথে সমাজের কিছু অপরিনামদর্শী বিপদগামি লোক ও রয়েছে। যাদের কে বিভিন্ন
প্রলোভন ও জিহাদের অপব্যাখ্যা দিয়ে স্বজাতির বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। তবে কেও
বুঝে সন্ত্রাসী করুক আর না বুঝে করুক, প্রলোভনে করুক বা অন্য কোনো কারণে করুক,
ইসলামি আইনে সন্ত্রাসীর কোনো ক্ষমা নেই। এ ব্যাপারে কোরআন দ্বার্থহীন ঘোষনা
করেছে.......
ইরশাদ হচ্ছেঃ--
" সন্ত্রাসীদের হত্যা করা হবে অথবা শুলিতে চড়ানো হবে, অথবা তাদের হাত-পা
বিপরিত দিক থেকে কেটে দেওয়া হবে, অথবা তাদেরকে কারাগারে অাবদ্ধ করে রাখা হবে"।
বড় আশ্চার্যের বিষয় হলো, ইসলামের নামে যারা সন্ত্রাস করছে তারা কালিমা পাঠকারী
মুসলমানকে কাফের ফাতাওয়া দিয়ে হত্যা করা সওয়াবের কাজ মননে করছে। একজন মুসলমান
হতে পারে ব্যক্তি জিবনে সে একজন গোনাহগার, সে জন্য তাকে কাফের বলার অধিকার
শরিয়ত কাওকে দেয়নি। ইমামে আযম আবু হানিফা রহঃ বলেন-- একজন মানুষের মাঝে কাফের
বলার নিরানব্বইটা গুণ থাকার পরে যদি একটা কেবল গুণ থাকে মুসলমান বলার মতো, তবে
তাকে মুসলমানই বলতে হবে।
মুসলমানকে হত্যা করা কুফুরী কাজ।
ইরশাদ হচ্ছেঃ--
যে ব্যাক্তি কোনো মুসলমানকে ইচ্ছাপূর্বক হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম, সে
সেখানে অনন্তকাল থাকবে। তার প্রতি আল্লাহর ক্রোধ ও লানত। তিনি তার জন্য
মহাশাস্তিপ্রস্তুত করে রেখেছেন।
( সুরা নিসা: ৯৩)
কোনো ব্যক্তি যদি বিধর্মী ও হয় তবু তাকে এ ব্যাপারে হত্যা করা যাবে না যে, সে
অমুসলিম। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ-- " যে ব্যাক্তি কোনো অমুসলিম নাগরিক
কে হত্যা করবে কিয়ামতের দিন আমি তার বিররুদ্ধে ফরিয়াদী হবো"।
( আবু দাউদ ২/৪৩৩)
আাত্মঘাতি বোমা হামলা আত্মহত্যার শামিল। বিশ্বনাবি বলেনঃ--
"যে ব্যক্তি যে ধরনের জিনিস দ্বারা আত্মহত্যা করবে, কিয়ামতের দিন তাকে ঐ রকম
শাস্তিই দেয়া হবে"
( মু'জামুল কাবির লিত্তাবরানি পৃ: ১৩২৮)
সুতরাং, আজকে যে সব গোপন সংগঠন কোরআন- হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে জিহাদি
প্ররোচনা দিচ্ছে তাদের এটা জিহাদ  নয়, তারা মুজাহিদ ও নয়, তারা শহীদ ও নয়।
তারা খুনি, তারা আত্মহত্যাকারী। আমরা সব সময় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে
বিশ্বাসি, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদে বিশ্বাসি নই। তবে এর অর্থ এই নয় যে, ইসলামে
জিহাদ বলতে কিছু নেই। সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামি জিহাদ ছিল,আছে এবং থাকবে।জিহাদ
ইসলামের এক শাশ্বত বিধান। আল্লাহ সকলকে সঠিক কথাগুলো বুঝার তাওফিক দান করুন।
আমিন।।
.
লেখকঃ-- (গবেষক ও কলামিষ্ট)
মুফতি আরিফ মাহমুদ হাবীবি
খতিবঃ--
শতবছরের ঐতিহ্যবাহি কেন্দ্রীয় কাশিপুর বড় মসজিদ, নারায়ণগজ্ঞ।
মুহাদ্দিসঃ--
জামিয়া কাসেমুল উলুম মাদানিয়া, নারায়ণগঞ্জ।
szarif786@gmail.com
01914555679

No comments:

Post a Comment